গণধর্ষণের শিকার এক সৌদি নারীকে ২০০ বেত্রাঘাতের নির্দেশ !
গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর তা সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করার কারণে সৌদি ১৯ বছর বয়সী এক তরুণীকে ২শ বেত্রাঘাতের পাশাপাশি ৬ মাসের কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছে সেদেশের আদালত । (সূত্র: ফেইথ ফ্রিডম, দি বাংলাদেশ টুডে)
![]() |
গণধর্ষণের শিকার এক সৌদি নারীকে ২০০ বেত্রাঘাতের নির্দেশ |
একে তো ঐ তরুণী ৭ জন দ্বারা গণধর্ষণের
শিকার হয়েছে । তার উপর ধর্ষকদের বিচার না করে ঐ তরুণীকেই ২০০ বেত্রাঘাতসহ ৬ মাসের
কারাদন্ডের নির্দেশ ! এ যেনো মজলুমের উপর আরো জুলম ।
যে ইসলাম নারীকে আইয়্যামে জাহেলিয়াতের
যুগ থেকে রক্ষা করে জান্নাতের অধিকারিণীতে রূপান্তরিত করেছে, যে ইসলামের মেয়েরা মহমানব
রাসূল সাঃ এর কাছে ফাতেমার ন্যায় আদরণীয়া, কলিজার টুকরা, যে ইসলামে নারীদেরকে এতো
বেশি স্বাধীনতা দিয়েছে- পুরুষের সাথে সব রকম ইবাদতে যেমন- নামাযে, যুদ্ধে, চিকিৎসা
প্রদান, শিক্ষায়, সফরে সর্বত্রে অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে, সেই ইসলামের আজকের কথিত
ধারকবাহকেরা আকাশের ন্যায় বিশাল ইসলামকে আপাদমস্তক হিজাবে, ঘরের চারকোণায়, নেকাব-দাঁড়ি-টুপি-টাখনুর
উপর কাপড় পড়ানোতে বন্দী করে রেখেছে ।
খোদ সৌদি আরবেই আজকে আর ইসলাম নেই ।
সেখানে ইসলামের নামে যা চলছে, সেটা আল্লাহ-রাসূলের দেয়া ইসলাম নয় । যদি তাই হতো,
তাহলে সেখানে আজকে ইসলামের নামে যা হচ্ছে তার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সকল
সৃষ্টির কাছে দায়ী থাকবেন । (নাউযুবিল্লাহ)
আল্লাহর দেয়া ও তাঁর রাসূলের দ্বারা
প্রতিষ্ঠিত ইসলাম যদি এমনই হতো তাহলে আল্লাহর রাসূল সাঃ কখনোই তাঁর আসহাবদের এরকম
স্বপ্ন কখনোই দেখাতেন না যে, এমন এক সময় আসবে যখন এই আরবে মধ্য রাতে অতি সুন্দরী
নারী গা ভর্তি অলংকার পড়ে হাজার হাজার মাইল একাই পাড়ি দিবে, তবু সে নারীর মনে না
থাকবে সম্ভ্রম হারানোর ভয় না থাকবে অলঙকার হারানোর ভয় । রাসূল সাঃ এরকমটি স্বপ্ন
শুধু তাঁর আসহাবদের দেখিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন না । ইতিহাস সাক্ষী, রাসূল সাঃ তাঁর
জীবদ্দশায় আরবে সেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ।
অথচ আজকের খোদ সৌদিতে নারীদের
দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় । সেদেশের প্রতিষ্ঠিত শরীয়াহ
অনুযায়ী, কোনো নারী ঘর থেকে বের হলে তার সাথে কোনো পুরুষ অভিভাবক নিয়ে বের হতে হবে,
অন্যথায় তার শাস্তি । উক্ত নারী ধর্ষণের শিকারের আগে অনাত্মীয় এক যুবককে নিয়ে
বাইরে বের হন । পথিমধ্যে হঠাৎ আক্রমণের শিকার হোন ঐ নারী ও যুবক । আক্রমণকারীরা
তরুণী ও তার বন্ধুকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তরুণীকে সাত ব্যক্তি মিলে গণধর্ষণ করে এবং
তার বন্ধুর উপর চালায় শারীরিক নির্যাতন ।
ধর্ষণ পরবর্তীতে তরুণী উক্ত ঘটনার
সত্যতা জানিয়ে সৌদি দেশের এর বিচার চাইলে উল্টো ঐ নারীর উপরেই এ মর্মে ৯০ টি
বেত্রাঘাত শাস্তির নির্দেশ দেয়া হয় যে, আত্মীয় অভিভাবক ছাড়া ঘর থেকে বাইরে একা বের
হয়ে ঐ দেশের শরীয়াহ ভঙ্গ করেছে । এরপর ওই তরুণীর আইনজীবী উচ্চ আদলতে আপিল করলে
আদালত তার শাস্তি বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে দেয়। সুবিচার না পেয়ে বরং অবিচার পেয়ে যখন ঐ তরুণী
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সংবাদ মাধ্যমে আদ্যন্ত প্রকাশ করলে আদালত তার আইনজীবিকে তার
কেস লড়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তার লাইসেন্স কেড়ে নেয় এবং তার বিরুদ্ধে
সমন জারি করে।
এক বিবৃতিতে বিচার মন্ত্রনালয় এই
শাস্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ওই নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রমাণিত হয়েছে এবং তিনি আদালতের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে সংবাদ মাধ্যমের
মুখোমুখি হওয়ায় তার শাস্তিকে দ্বিগুণ করা হয়েছে।
ইসলামে কী হাস্যকর আর বর্বর নীতি
স্থাপন করেছে সেদেশের ধর্মের ধারক-বাহকেরা !
প্রথমত, তারা সেদেশে নারীর সম্মান
দিতে জানেনা, যার কারণে নারীদেরকে তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করে
।
দ্বিতীয়ত, নারীদের নিরাপত্তা দিতে
পারেনা, যার কারণে অভিভাবক নিয়ে বের হওয়ার মনগড়া শরীয়াহ বের করেছে ।
তৃতীয়ত, ধর্ষকদের বিচার না করে
ধর্ষিতার উপর শাস্তি চাপিয়ে দিয়ে বিশাল অন্যায় করেছে । মানবতার বুকে লাথি মেরেছে ।
আদলের পরিবর্তে স্বৈরাচার স্থাপন করেছে ।
এই যদি হয় ইসলাম, সে ইসলামের
অনুসারীরা যারা নিজেকে মুসলিম দাবি করে জান্নাতে যাবার স্বপ্ন দেখেছেন, তারা
নিশ্চয় মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন । আপনাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব আসা, মাত্র
সময়ের ব্যাপার ।
-ইলিয়াস আহমেদ
0 comments:
Post a Comment